হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা শিশুদের দেহে মারাত্মক ধরনের সংক্রমণ করে। এ সংক্রমণের মধ্যে অন্যতম হল ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস (ব্যাকটেরিয়া জনিত মস্তিস্কের সংক্রমণ) এবং মারাত্মক নিউমোনিয়া। এছাড়াও এই ব্যাকটেরিয়া রক্ত, অস্থি সন্ধি, হাড়, গলা, কান এবং হৃৎপিণ্ডের আবরণের সংক্রমণ ঘটায়।
হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা “এ, বি, সি, ডি, ই, এফ” এই ৬ ধরনের হয়ে থাকে। তবে শিশুদের ৯০ ভাগেরও বেশি মারাত্মক সংক্রমণের জন্য হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি দায়ী। হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি সাধারণত ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের হয়ে থাকলেও ৪ মাস থেকে ১৮ মাসের শিশুরাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
কিভাবে ছড়ায়?
এই রোগের জীবাণু রোগাক্রান্ত শিশুর হাঁচি কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে এলে এমনকি আক্রান্ত শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর (তোয়ালে, খেলনা ইত্যাদি) মাধ্যমে এ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।
লক্ষণ
ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসঃ
- মাথা ব্যথা, জ্বর, বমি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যায়
- উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়
- গিটে ব্যথা হয়
- ঘুম ঘুম ভাব হয়
- শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়
- অচেতন হয়ে যায়
মারাত্মক নিউমোনিয়াঃ
- যেকোন একটি সাধারণ বিপদজনক লক্ষণ থাকে, যেমন – পান করতে বা বুকের দুধ খেতে পারে না, অথবা সব খাবার বমি করে ফেলে, অথবা খিঁচুনিহয়
- শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে দেবে যায়
- দ্রুত শ্বাস
প্রতিরোধ
তিন ডোজ হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
ইপিআই কার্যক্রমে হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্তির ফলে ডিপিটি এবং হেপাটাইটিস-বি টিকা আলাদা আলাদা না দিয়ে সমন্বিতভাবে ১টি টিকার মাধ্যমে ৫টি রোগের (ডিফথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি এবং হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি) বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই টিকাকে পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন বলা হয়।